চাকরির পূর্ব প্রস্তুতি
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
শিক্ষাজীবন শেষে প্রথম কাজটি হচ্ছে নিজের ক্যারিয়ার সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া। আপনি কর্মজীবনে কী করতে চান? ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিন।
যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার ইচ্ছা থাকে তবে প্রস্তুতির এখনই সময়। চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেয়ার ক্ষেত্রে একটু সচেতন না হলে বেকারত্ব বরণ করাই নির্ধারিত হয়ে যাবে আপনার জীবনে।
কেননা শিক্ষাজীবন শেষে ডিগ্রি অনুযায়ী একটি চাকরির প্রত্যাশা সবারই থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে বিভিন্ন কারণে তা সম্ভব হয়ে ওঠে না। প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রিই আমাদের দেশে চাকরিতে আবেদনের প্রধান যোগ্যতার মাপকাঠি। কিন্তু চাকরি পেতে হলে অনেক ক্ষেত্রে ডিগ্রির ভূমিকাই মুখ্য নয়। তাই এর পাশাপাশি প্রয়োজন নানাবিধ প্রস্তুতির।
ফলে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে আপনাকে সচেতন হতে হবে।
১/ সাধারণ জ্ঞানঃ
প্রথমেই বাংলা, ইংরেজি, গণিত, তথ্যপ্রযুক্তি, বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলী, মনস্তাত্ত্বিক জ্ঞান এবং সাম্প্রতিক দেশ এবং দেশের বাইরে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কে জানাটা জরুরি। যাকে এককথায় বলা যায় সাধারণ জ্ঞান।
সাধারণ জ্ঞান কথাটি যতই সাধারণ মনে হোক না কেন পরীক্ষার হলে তা কিন্তু অসাধারণ হয়ে দাঁড়ায়। সাধারণ জ্ঞান তার সীমানা পেরিয়ে অসাধারণ হয়ে ওঠে। ফলে চাকরির পরীক্ষার মুখোমুখি হওয়ার আগেই আপনাকেও হয়ে উঠতে হবে অসাধারণ।
২/ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাঃ
চাকরির পরীক্ষায় নিজের অবস্থান নিশ্চিত করতে হলে আপনাকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে। এক্ষেত্রে কিছু বিষয়ের প্রতি নজর রাখা জরুরি। তাই আপনাকে শিক্ষাগত যোগ্যতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ক্যারিয়ার টার্গেট করতে হবে। টার্গেট অনুযায়ী আপনাকে নিয়মিত সময়, শ্রম, ধৈর্য এবং অর্থ বিনিয়োগ করতে হবে।
৩/ কখন প্রস্তুতি নিবেনঃ
শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই চাকরির প্রস্তুতি নিতে থাকুন। তা নাহলে শিক্ষাজীবন শেষে চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করলে আপনাকে চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন আট থেকে দশ ঘণ্টা সময় প্রস্তুতির জন্য ব্যয় করতে হবে। যারা উচ্চ শিক্ষার শুরু থেকে প্রস্তুতি নিতে থাকেন তারা প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনার পাশাপাশি চাকরির পরীক্ষার জন্য একটি মানসিক প্রস্তুতি স্মরণে রাখেন। এক্ষেত্রে তারা অবসর সময়টাকে কাজে লাগান।
৪/প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিটঃ
আপনি প্রতিদিন অত্যন্ত সচেতনতার সাথে ২০ থেকে ৩০ মিনিট সময় প্রস্তুতির জন্য ব্যয় করুন। প্রতিদিনের এই ২০ মিনিট সময় করে শিক্ষাজীবন শেষে আপনি এমন এক অর্জনের মুখোমুখি হবেন যে প্রত্যাশিত চাকরি অনায়াসে ধরা দেবে হাতের মুঠোয়।
৫/যদি লক্ষ্য থাকে অটুটঃ
তবে জেনে রাখবেন, অনেকের জন্যই সময় কোনো সমস্যা নয়, মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় সময়ের ব্যবস্থাপনা। সময় ব্যবস্থাপনায় আপনি যেন হেরে না যান এ কারণে আপনার থাকা দরকার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য এবং সে লক্ষ্য বাস্তবায়নের পূর্বক্ষণ পর্যন্ত অপরিসীম ধৈর্য। যদি লক্ষ্য থাকে অটুট আপনি একদিন সফল হবেন। তাই আপনি যদি সময়, শ্রম, অর্থ এবং ধৈর্য সমানভাবে ব্যয় করতে পারেন তবেই আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছে যাবেন। চাকরি নামক সোনার হরিণটি ধরা দেবে আপনার হাতের মুঠোয়।
৬/খোঁজ-খবরঃ
কোন ধরনের চাকরির জন্য কি ধরনের প্রস্তুতি দরকার। সে সম্পর্কে আগেই খোঁজ-খবর নিতে হবে। যেমন- শিক্ষক হতে চাইলে আপনাকে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা দিতে হবে। তাই এখনই শিক্ষক নিবন্ধনের জন্য প্রস্তুতি নিন। তাই যে পেশা আপনি বেছে নিয়েছেন, সে সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিতে শুরু করুন আগে থেকেই। সেই পেশার জন্য বিশেষ কোনো প্রশিক্ষণ বা স্কিলের দরকার হলে, রপ্ত করতে শুরু করুন আগে থেকেই। যদি কোনো কম্পেটেটিভ পরীক্ষা দিতে হয়, শুরু করে দিন তার জন্য প্রস্তুতিও।
৭/যোগাযোগঃ
সবকিছুর মূলেই রয়েছে যোগাযোগ। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে হবে। কিংবা বিভিন্ন মাধ্যমে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এছাড়া আপনার বন্ধুমহলও উপকারে আসতে পারে। তাই ভালো চাকরি পেতে সবধরনের যোগাযোগ আপনার জন্য জরুরি।
৮/বায়োডাটা তৈরী
চাকরির আবেদন করার সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় আপনার বায়োডাটা। কারণ, চাকরিদাতার কাছে সেটাই আপনার ফাস্ট ইম্প্রেশন। অতএব, নিজের বায়োডাটাটি ভালোভাবে তৈরি করে রাখুন। ইন্টারনেট ঘাঁটলেই পেয়ে যাবেন ভালো সিভি তৈরি করার অনেক উপায়। তা থেকে বেছে নিয়ে যুগোপযোগী একটি বায়োডাটা তৈরী করে ফেলুন।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাফ